ই-কমার্স এর পূর্ণরূপ হলো ইলেকট্রনিক্স কর্মাস বা ইলেকট্রনিক্স বাণিজ্য। এর ইলেকট্রনিক্স শব্দ থেকে খুব সহজেই বুঝা যায় যে এই ধরণের ব্যবসাতে ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার আছে। হ্যাঁ, ইলেক্ট্রনিক্স প্রযুক্তি যেমন মোবাইল, ট্যাবলেট, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহার করে অনলাইনে ব্যবসায়িক লেনদেন করা হলে তাকে ই-কমার্স বলে। আমরা যে প্রথাগত ব্যবসা- বাণিজ্য করি তারই ডিজিটাল বা আধুনিক সংস্করন হলো ই-কমার্স। এই পদ্ধতিতে ব্যবসায়ী অনলাইনে তার ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ক্রেতার কাছে তার পণ্য উপস্থাপন করেন এবং ক্রেতা ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার পছন্দের পণ্য অর্ডার করতে পারেন। তারপর, বিক্রেতা সেই পণ্য কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ক্রেতার ঠিকানায় পৌছে দেন। এই প্রক্রিয়ায় অনলাইনে ই-ব্যাংকিং বা মোবাইল ফ্রিলান্স এর মাধ্যমে অথবা পণ্য পাওয়ার পর মূল্য পরিশোধ করা যায় যাকে ক্যাশ অন ডেলিভারি বলে।
কেনা-বেচা ছাড়াও নিম্নোক্ত বিষয় গুলো ই-কমার্স এর অন্তর্ভূক্ত
অনলাইন বিজ্ঞাপন বাণিজ্য।
পণ্য নিলাম।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও সেবার মূল্যের তুলনা মূলক বিশ্লেষন।
টিকেট ক্রয়।
বিভিন্ন ফি প্রদান প্রভৃতি।
আগামী ই-কমার্স এর জয়জয়কার হবে ইনশাআল্লাহ।
২। ই-কমার্স কত প্রকার?
অনলাইন পণ্য বা সেবা ক্রয় বিক্রয়ের উপর ভিত্তি করে ই-কমার্স কে চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায় । যেমন-
এক, B2B : বিজনেস টু বিজনেস বা ব্যবসা থেকে ব্যবসা। একাধিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেন হলে তাঁকে বিটুবি বলে। যেমন মনে করেন আলাউদ্দিন ভাইয়ের ওকেশপবিডি পণ্য কিনলো আলিবাবা থেকে। আবার মনে করেন যে আপনি একটি ই-কমার্স সাইট বানিয়ে নিলেন কোন ডেভেলপারের থেকে অনলাইনে । এটাও বিটুবি ই-কমার্সের অন্তর্ভুক্ত।
দুই, B2C: বিজনেস টু কনজিউমার বা ব্যবসায়ীর সাথে ভোক্তার সরাসরি লেনদেন । যেমন মনে করেন আমি কোনো ই-কমার্স সাইট থেকে কোনো পণ্য কিনলাম । এটি হলো হলো বিটুসি ই-কমার্স ।
তিন, C2B : কনজিউমার টু বিজনেস বা ভোক্তার সাথে ব্যবসায়ীর সম্পর্ক। যেমন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের পর ব্যবসায়ীরা ক্রেতার থেকে রিভিউ আশা করে।
চার; C2C: কনজিউমার টু কনজিউমার বা ভোক্তা থেকে ভোক্তা । যেমন বিক্রয়ডটকম একটি প্লাটফর্ম যেখানে এটি শুধু একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। পণ্য কেনা বেচা করে অন্যরা।
এছাড়াও দুই প্রকারের ই-কমার্স আছে
B2G : বিজনেস টু গভ:মেন্ট বা ব্যবসা থেকে সরকার। সরকারি বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনা।
C2G: কনজিউমার টু গভার্নমেন্ট বা ভোক্তা থেকে সরকার । সরকারি বিভিন্ন ফি ট্যাক্স ইত্যাদি অনলাইনে প্রদান করা।
৩। ফেইসবুক পেইজ
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো ফেসবুক। ছোট-বড়, ধনী-গরীব, মূর্খ-জ্ঞানী প্রায় সকলেই ফেসবুক ব্রাউজ করে। ফেসবুকে প্রচুর মানুষের সমাগম থাকে দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা ।
একজন ফেসবুক ব্যবহার কারী তার আইডিতে পাঁচ হাজার বন্ধুকে সংযুক্ত করতে পারে এর বেশি না। বেশি মানুষের মধ্যে নিজের প্রচারনার জন্য প্রয়োজন ফেসবুক পেজ প্রয়োজন হয় । যেমন অনেক সেলিব্রিটি ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে তাদের অসংখ্য ভক্তবৃন্দের কাছে তাদের খবরাখবর এবং আবেগ অনুভূতি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ।
তবে বর্তমানে ই-কমার্স ব্যবসায়ীগণ ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তাঁদের পণ্যের প্রচার চালাচ্ছে এবং অনেকে এফ কমার্স করছে ।
ফেসবুক আইডি থেকে পেজের কিছু সুবিধা -
এখানে ফ্রেন্ড সিস্টেম নেই। এখানে শুধু ফলোয়ার এবং লাইক। তাই যত ফলোয়ার তত ভিউ।
একাধিক এডমিন থাকার সুযোগ আছে তাই একাধিক ব্যক্তি পোষ্ট করতে পারে।
পোষ্ট বুষ্ট করার মাধ্যমে টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানো যায় ।
পোষ্ট বুষ্ট করার ক্ষেত্রে টার্গেট অডিয়েন্স নির্বাচন করা যায় বয়স, লিঙ্গ এবং স্থান ভেদে।
ব্যক্তিগত প্রোফাইলের উপর কোন প্রভাব পড়েনা।
এছাড়াও আরো অনেক সুবিধা আছে হয়তো।
এখন প্রশ্ন হলো একটি পেজ কিভাবে খোলা যায়?
ফেসবুক আইডি এমন সকলেই পেজ খুলতে পারবেন । আপনার ফেসবুকে লগিন করার পর পেজ অপশন থেকে ক্রিয়েট পেজ/create page এ ক্লিক করলেই কিছু নির্দেশনা পাবেন । সেগুলো পূরন করে ক্রিয়েট করলেই তৈরি হয়েগেল ফেসবুক পেজ।
৪। ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি
প্রচলিত ব্যবসা করতে যেমন একটি দোকান লাগে, দোকানের নাম লাগে এবং জায়গা লাগে আবার সেই দোকানের ভেতরে একদিকে ক্যাশ বাক্স থাকে বিভিন্ন তাকে বিভিন্ন মাল সাজানো থাকে। তেমনই ই-কমার্সে দোকান হিসেবে একটি ওয়েবসাইটের প্রয়োজন হয় । ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রেতা তাঁর পণ্য প্রদর্শন করে এবং প্রতিটি পণ্যের সাথে তার গুণগত মান এবং মূল্য দেওয়া থাকে। ক্রেতারা অনলাইনে এসব দেখে তাঁদের পছন্দ মতো পণ্য অর্ডার করে।
ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন হয় একটি নাম। নামটি অবশ্যই একক এবং পণ্য বা সার্ভিস সম্পর্কিত হতে হবে যেন মানুষ নাম শুনেই বুঝতে পারে আপনার ব্যবসা কিসের । উদাহরণ সরূপ মনে করেন আমি মিষ্টির ব্যবসা করব। তাহলে নাম হতে হবে মিঠাইবাজার, রসেরমিষ্টি, মিষ্টিকিনি এই ধরনের । নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে আবার দেখতে হবে সেই নামে ডোমেইন ফাঁকা আছে কিনা।
ব্যবসা এবং পণ্য সম্পর্কিত নাম যেই নামে ডোমেইন ফাঁকা আছে তা নির্বাচন করা হলে ডোমেইন কিনতে হবে। এই নামেই আপনার ব্যবসাকে মানুষ চিনবে।
ডোমেইন এর পর হোস্টিং ।
আপনার সাইটের যাবতীয় ডাঁটা সংরক্ষণ করার জন্য হোস্টিং দরকার ।
বিভিন্ন ক্যাটাগরির হোস্টিং আছে। যেমন
ডেডিকেটেড হোস্টিং: একটি সার্ভার কম্পিউটার একটি ওয়েবসাইট হোস্ট করে।
শেয়ারেড হোস্টিং : একটি সার্ভার একাধিক সাইট হোস্ট করে।
ভিপিএস বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার হোস্টিং : একটি ডেডিকেটেড হোস্টিং কে সফ্টঅয়্যার এর মাধ্যমে আলাদা আলাদা সার্ভার তৈরি করে হোস্টিং করে।
ক্লাউড হোস্টিং : এই সিস্টেমে হোস্টকৃত সাইট একটি সার্ভার না থেকে ক্লাউড প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিন্নভিন্ন সার্ভার থেকে ব্যবহারকারীদের সর্বোত্তম সেবা দেয় ।
ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য ক্লাউড হোস্টিং উপযুক্ত ।
ডোমেইন এবং হোস্টিং সম্পর্কে জানা হলো ।বাকি থাকলো ওয়েব সাইট তৈরি ।
ওয়েব সাইট তৈরির জন্য একজন ওয়েব ডেভেলপারকে হায়ার করতে পারেন অথবা নিজেই নিজের সাইট তৈরি করতে পারেন । ইন্টারনেটে এই কাজের জন্য কিছু জনপ্রিয় সফ্টঅয়্যার আছে। যেমন
ওপেন কার্ট
উকমার্স
জেনকার্ট
ওএসকমার্স
টমেটো কার্ট
ভার্চুমার্ট।
ওপেন কার্ট
উকমার্স
জেনকার্ট
ওএসকমার্স
টমেটো কার্ট
ভার্চুমার্ট।
এরপর নজর দিতে হবে ওয়েব সাইট এর নিরাপত্তার দিকে। যেন ওয়েবসাইটের কোনও তথ্য চুরি না হয় সেই জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৫। ই-কমার্সে বিক্রি কি করে হয়?
ই-কমার্স মানেই অনলাইনে কেনা কেটা করা। বিক্রেতা একটি ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ক্রেতাদের নিকট পণ্যের গুনগত মান এবং মূল্য সহ পণ্য প্রদর্শন করেন এবং ক্রেতা তার পছন্দ মতো পণ্যের অর্ডার করেন। অর্ডার করতে গেলে দুই ধরনের পেমেন্ট প্রক্রিয়া আছে।
এক. অনলাইন পেমেন্ট:
বিকাশ, রকেট সিউরক্যাশ প্রভৃতি মোবাইল ব্যাংকিং অথবা ভিসা, মাস্টার কার্ড প্রভৃতি ই-ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পণ্য অর্ডার করার সময় পেমেন্ট করা।
দুই. ক্যাশঅন ডেলিভারি: পণ্য হাতে পেয়ে নগদ অর্থ প্রদান করা।
পণ্য ডেলিভারি করার জন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ডেলিভারি ম্যান থাকে । তারা একটি নিদির্ষ্ট এলাকা পর্যন্ত পণ্য ডেলিভারি করে। আর তাদের এলাকার বাইরে হলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য ডেলিভারি করে থাকে।
৬। ই-কমার্স উদ্যোক্তা
ই-কমার্স ব্যবসা করার উদ্যোগ যিনি গ্রহন করেন তাকেই ই-কমার্স উদ্যোক্তা বলে।
যে কোন কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করা তেমন কঠিন কোন কাজ না। কিন্তু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন। উদ্যোগ বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম এবং দীর্ঘ সময় ধরে লেগে থাকা।
ই-কমার্স উদ্যোক্তাগনের সর্ব প্রথম কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকতে হবে। সব উদ্যোগ সফল হবে এমন কোন কথা নেই এবং সফলেই সংখ্যা খুব কম । তাই হেরে গেলেও উঠে দাড়ানোর মানসিকতা থাকতে হবে।
একজন ই-কমার্স উদ্যোক্তার নিম্নবর্ণিত গুণ থাকতে হবে-
১. সততা
সততাই সাফল্যের চাবিকাঠি। সতত ছাড়া ই-কমার্স ব্যবসায় ঠিকে থাকা যাবে না। আপনি যদি অসৎ হোন এবং ক্রেতার সাথে প্রতারণা করেন তাহলে ব্যবসা লাঠে উঠবে।
২. পেশাদারিত্ব: ই-কমার্স ব্যবসায়ে সম্পূর্ন পেশাদারিত্বের সহিত সেবা দিতে হবে। ক্রেতারা প্রথাগত ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে ই-কমার্স এ আসবে । এখানে তারা যদি আশানুরূপ ফল না পায় তাহলে তাহলে আবার প্রথাগত বাজারে ফিরে যাবে।
৩.ধৈর্য্যশীল: ই-কমার্স উদ্যোক্তাকে ধৈর্যশীল হতে হবে। প্রথম দিকে বিক্রি নাও হতে পারে। আরাব কোন ক্রেতা বারবার নক করতে পারে। এসব ব্যপারে ধৈর্যশীল হতে হবে।
জানার আগ্রহ: ই-কামর্স সম্পর্কে প্রতিনিয়ত জানতে হবে।
৪.আইটি জ্ঞান: ই-কমার্স উদ্যোক্তাকে আইটি জ্ঞান সম্পূর্ণ হতে হবে। কেননা, ই-কমার্স আটি নির্ভর ।
এছাড়াও অনেক গুণ থাকা প্রয়োজন যা আমি আরেক দিন আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
৭। আপনি কেন ই-কমার্সে আসতে চান?
ই-কমার্স বর্তমানে বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর অনেক দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
প্রথাগত ব্যবসায় যেমন ব্যবসায়ীরদের অনেক ঝামেলা পহাতে হয়, তেমনি ক্রেতা সাধারনেরও গ্লানির শেষ নেই। এক দোকান থেকে আরেক দোকান ঘুরতে ঘুরতে অবস্থা কাহিল হয়ে যায়।
ই-কমার্স, ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কেই একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ উপহার দিয়েছে।
প্রথাগত ব্যবসায় দেখেছি অনেককেই প্রতারিত হতে। আবার নিজেও প্রতারিত হয়েছি।
আমি অনেক আগে থেকেই সততার সহিত ব্যবসা করতে চাইতাম। আমি দেখিয়ে দিতে চাইতাম সত্য বলে সৎপথে চলেও ব্যবসায়ে উন্নতি করা যায়। কেন না, ছোট বেলা থেকে শুনে এসেছি যে মিথ্যা না বললে, ভুগিজুগি না করলে ব্যবসা হয় না। এই ধারনাকে মিথ্যা প্রমাণ করার একটি সুপ্ত বাসনা আমার মনের ভেতর ছিল। কিন্তু কর্মের স্বাধীনতা এবং মুলধনের অভাবে সুপ্ত বাসনা সুপ্তই রয়ে গেছে।
কিন্তু এখন, দেখছি, ই-কমার্স আমার সেই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দিচ্ছে। এখানে প্রথমেই খুব বেশি মুলধনের প্রয়োজন নেই। আবার আমি দেখতে পারছি সৎ ভাবে ব্যবসা করার জন্য ই-কমার্স খুবই সহায়ক।
আমি যদি কোন দিন ই-কমার্সে আসি তাহলে আসব সৎ ভাবে ব্যবসা করার জন্য। আমার ব্যবসায় কোন রকম ভুগিজুগি থাকবে না।
আমার সেবা পেয়ে যেন ভোক্তাগন খুশি হন সেই লক্ষ্যই আমার থাকবে চির কাল।
৮। কুরিয়ার সার্ভিস বা ডেলিভারি
ই-কমার্স ব্যবসায় ডেলিভারী একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিক সময়ে সঠিক পণ্য ডেলিভারি নিশ্চিত করতে পারা একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জন্য খুব জরুরি। আমি একটি ই-কামার্স সাইটে বই অর্ডার করেছিলাম । কথা ছিল ৩-৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দিবে। কিন্তু তারা দিতে পারেনি। আমি কয়েক বার ফোন করে ছিলামও । আমি অর্ডার ট্র্যাক করে দেখলাম ই-কমার্স সাইটের দোষ নেই কিন্তু তাদের কুরিয়ার সার্ভিস বিলম্বিত করছে। তারা আমাকে কুরিয়ার সার্ভিসে ফোন করতে বলে ছিল । উত্তরে আমি বলে ছিলাম , আমার লেনদেন তো আপনার সাথে । আমি কেন কুরিয়ারে ফোন করব? পারলে আপনি ফোন করে দ্রুত ডেলিভারি দিতে বলেন।
আমার মনে হয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গুলোর পণ্যে কুরিয়ার করেই কাজ শেষ মনে করা ঠিক না। পণ্য যথা সময়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছল কি না সেটার খোজ খবর নেওয়া উচিত।
যারা ভাল সার্ভিস দেয় তাদের মাধ্যমেই পণ্য ডেলিভারি দেওয়া উচিত।
বাংলাদেশের ভেতরে যে কোন জায়গায় পণ্য পাঠায়
সুন্দরবন কুরিয়ার
এসএ পরিবহন
কন্টিনেন্টাল
করতোয়া
জননী প্রভৃতি কুরিয়ার সার্ভিস।
আবার দেশের বাহিরে পণ্য পাঠানোর জন্য আছে ডিএইচএল কুরিয়ার সার্ভিস।
এছাড়াও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কিছু নিজস্ব ডেলিভারি ম্যান থাকে যারা অফিসের আসে পাশের এলাকায় হোমডেলিভারি দিয়ে থাকে।
৯। ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন
বর্তমানে যেকোনও প্রচারণা চালানোর সবচেয়ে ভাল এবং কার্যকরী মাধ্যম হলো ফেসবুক। আবার ফেসবুক কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এফ-কমার্স।
ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া তুলনামুলক কম ব্যয়সাধ্য এবং বেশি প্রচারের নিশ্চয়তা।
ফেসবুকের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য এটি বিজনেস পেজ দরকার যা তৈরি করা খুব সহজ। ফেসবুক আইডি থাকলেই এটি তৈরি করা যায়।
ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য ফেসবুককে কিছু পেমেন্ট করতে হয়।
ফেসবুক নিম্নোক্ত পেমেন্ট মেথড ব্যবহার করে।
ভিসা কার্ড
মাস্টারকার্ড
আমেরিকান েএক্সপ্রেস কার্ড
পেপাল এবং
ডিসকভার
এর কোনটি আপনার আপনার থাকলেই আপনি নিজেই ফেসবুকে এড দিতে পারবেন।
এড তৈরি করার জন্য ফেসবুকের বিজনেস পেজে গিয়ে এড তৈরি করতে হবে।
তারপর সেটি বুস্ট করতে হবে।
এড তৈরির সময় অবশ্যই কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
ফেসবুক এডের সবচেয়ে ভাল দিক হলো কাস্টমাইজ এড।
মনে করে আপনি টি-শার্টের এড তৈরি করবেন এবং বাংলাদেশের ভেতরে আপনি বিক্রি করবেন।
তাহলে আপনা অডিয়েন্স সিলেক্ট করার ক্ষেত্রে, কত বয়সের মানুষের কাছে এড পাঠাতে চান, শুধু কি পুরুষ না নারী পুরুষ উভয়ের কাছেই পাঠাতে চান আবার শুধু কি বাংলাদেশেই না অন্য দেশেও পাঠাতে চান এসব কিছু আপনার ইচ্ছা মতো নির্বাচন করতে পারবেন। এই বিষয় টি আসলেই দারুন।
বেশি সাজিয়ে লেখতে পারলাম না।
ইনশাআল্লাহ এই সব বিষয়ে আবার লেখব একটু গুছিয়ে লিখব। দোয়া করবেন সকলেই।
১০। ই-কমার্স কেন দরকার?
ই-কমার্স কেন দরকার নয়? সেটি বলেন।
দিন যত যাচ্ছে আমাদের কাজের গতি ততই বাড়ছে। আগে হজ্জ করতে যেতে হলে একবছর আগে রওনা দিতে হতো । আর এখন হজ্জের একদিন আগে রওয়া দিয়েও চলে যাওয়া যায়। এক বছরকে সংকুচিত করে একদিনে এনেছে আধুনিক প্রযুক্তি।
প্রযুক্তির ছোয়া থেকে বঞ্চিত হয়নি দেশের ব্যবসা ক্ষেত্রও।
প্রথাগত ব্যবসাতে অনেক ঝক্কিঝামেলা আছে, আছে ক্যাশ হারানোর ভয় । হাটে গরু কিনতে গিয়ে মলম পার্টির খপ্পরে পরে শূন্য হাতে ফিরে আসার গল্প খুব আনকমন না । আবার কেউ গরু বিক্রি করে ফেরার পথে ডাকাত কর্তৃক নিহত হওয়া বা মলম পার্টির খপ্পরে পরে শূন্য হাতে ফেরার গল্পও আমরা অনেক শুনেছি।
এছাড়াও বাজারে গেলে আছে মানুষে ভিড়, দোকানির সাথে দরদাম করার ঝামেলা । আছে প্রতারিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
এক জিনিস কেনার জন্য দশ দোকান ঘুরেও ব্যর্থ হওয়ার অভিজ্ঞাতাও কম নেই আমাদের।
আছে সময় অপচয়ের ঘটনা।
এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে ই-কমার্স ই একমাত্র ভরসা।
ঘরে বসেই পছন্দের পণ্য কেনা যাবে একশো দোকান(ওয়েবসাইট) ঘুরে। আবার সেই পণ্য বাড়িতে পৌছে দিবে বিক্রেতা।
আবার বিক্রতাদের লাগবেনা বিশাল দোকান আর একগাদা কর্মচারি যারা সুযোগ পেলে ক্যাশ মেরে দিবে।
বিক্রেতাও নিজ ঘরে বসেই তার ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে। আগেই মাল কিনে গোডাউন ভরতে হবে না বিক্রেতাকে। এমনকি পণ্যের অর্ডার পাওয়ার পরও পণ্যি কিনে ডেলিভারি দেওয়ার সুযোগ আছে।
এই কাজে দরকার শতভাগ সততা। একবার ক্রেতার মনজয় করতে পারলে আর চিন্তা করতে হবে না।
এতো সুবিধা ই-কমার্সে আছে বলেই আমাদের ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকেই এই দিকে এগিয়ে আসতে হবে।
এই সেকটর লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান করবে যা বাংলাদেশের একটি ভয়াবহ সংকট মুকাবিলা করতে ভূমিকা রাখবে। তাই আমাদের ই-কমার্সের দিকে এগিয়ে আসা উচিৎ।
1 Comments
Great writing Rabiul Islam vai
ReplyDelete